হিন্দু শাস্ত্রে ধর্মগ্রন্থ পুরাণ’এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। পুরানে লেখা বাণী খুবই কার্যকরী বলে মনে করা হয়। এই বিষ্ণু পুরাণ (Vishnu Puran) অনুযায়ী, কলিযুগে (Kaliyug) কোটিপতিরাও বিশাল অঙ্কের টাকার ঋণের বোঝা বইবেন। আয় করার নেশায় ভাল-মন্দ জ্ঞান হারাবেন। কলিযুগের নানান ঘটনার কথা বর্ণনা করা আছে বিষ্ণু পুরাণে (Vishnu Puran)। অষ্টাদশ হিন্দু মহাপুরাণের অন্যতম তথা একটি প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু ধর্মগ্রন্থ হল এই ‘বিষ্ণু পুরাণ’।
এখানে বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ভগবান বিষ্ণুর (Lord Vishnu) অবতার ও চরিত্র ছাড়াও বিভিন্ন যুগের রাজবংশ ও মানুষের অবস্থা বর্ণনা করা আছে। বিষ্ণুপুরাণের ষষ্ঠ খণ্ডের প্রথম অধ্যায়ে কালীধর্মণিরূপ বর্ণিত আছে। এই বিষ্ণুপুরাণে বর্ণিত রয়েছে, লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জনকারী ব্যক্তিও কলিযুগে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়বেন। তবে মহর্ষি কেন এমন কথা বললেন, এবার তা জেনে নেওয়া যাক।
সত্যযুগ, ত্রেতাযুগ ও দ্বাপরের ধর্মব্যবস্থা কলিযুগে বিলুপ্ত হওয়ার কথা ঋষি মৈত্রেয়কে বলেছিলেন মহর্ষি পরাশর। এই যুগে মানুষের একটাই কাজ থাকবে, যে কোন উপায়ে অর্থ উপার্জন করা। নিজেদের প্রভাব-শক্তি প্রদর্শনের জন্যই তাঁরা যে কোন উপায়ে অর্থ উপার্জনের দিকে মন থাকবে। তবে বেশি অর্থ উপার্জন করলেও, তাঁদের চাহিদা থাকবে আরও বেশি। এই যুগের মানুষজন নিজেদের বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে উপার্জিত অনেক অর্থ ব্যয় করবে।
ধারণা করা হচ্ছে, এখনকার দিনে মানুষ যে গৃহ ঋণ নিয়ে বাড়ি তৈরি করছে, সেদিকেই ইঙ্গিত করেছিলেন মহর্ষি পরাশর। যার ফলে অনেক অর্থ ঋণ নিয়ে বাড়ি তৈরি করার পর, সেই অর্থ শোধ করতে গিয়ে মানুষের সারাজীবন কেটে যাবে। যার ফলে এই অর্থ শোধ করতে গিয়ে তাঁকে আরও ঋণ নিয়ে ঋণী হতে হবে।
আবার মানুষের কাছে সামান্য অর্থ থাকলেও, সে নিজেকে অহংকারী হয়ে উঠবে। অন্যকে ছোট দেখানোর চেষ্টা করবে। মানুষকে কোন রকম দান ধ্যান না করে, নিজের প্রয়োজনেই অর্থ ব্যয় করবে। এই যুগে অর্থই হবে প্রধান বিষয়। যাদের বেশি অর্থ থাকবে, মানুষ তাঁদের পেছনেই ছুটবে। তা সে বিয়ের জন্য হোক, কিংবা আত্মীয়তার জন্য হোক।