প্রবীণ ভারতীয় শিল্পপতি “রতন টাটা” (Ratan Tata) আজ ৮৫ বছর বয়সী। তিনি ২৮শে ডিসেম্বর ১৯৩৭ সালে মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী এবং খুব উদর ব্যক্তি। রতন টাটা খুব শান্ত প্রকৃতির, কিন্তু তার সাথে সম্পর্কিত একটি উপাখ্যান রয়েছে, যা কারও উপর প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি উদাহরণ তৈরি করে। ফোর্ড মোটরসে’র চেয়ারম্যানের করা অপমানের প্রতিশোধ নিয়েছিলেন রতন টাটা, তাও খুব মজার উপায়ে।
প্রতিশোধের গল্প শুরু হয়েছিল ৯০’এর দশকে, যখন টাটা মোটরস তার গাড়ি টাটা ইন্ডিকা লঞ্চ করেছিল রতন টাটার নেতৃত্বে, যিনি টাটা সন্সের চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু সেই সময়ে টাটা গাড়ির বিক্রি রতন টাটার ভাবনা অনুযায়ী হচ্ছিল না। টাটা ইন্ডিকাতে গ্রাহকদের দুর্বল প্রতিক্রিয়া এবং ক্রমবর্ধমান লোকসানের কারণে, একটি সময় এসেছিল যখন তারা প্যাসেঞ্জার কার ব্যবসা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
এই জন্য তিনি কথা বলেছিলেন মার্কিন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফোর্ড মোটরসের সঙ্গে। তখন ফোর্ডের চেয়ারম্যান বিল ফোর্ড, রতন টাটাকে অপমান করেছিলেন এবং বলেছিলেন ‘আপনি কিছু জানেন না, কেন প্যাসেঞ্জার কার ডিভিশন চালু করলেন? আমি যদি এই চুক্তি করি, তবে এটি আপনার জন্য একটি মহান অনুগ্রহ হবে’। ফোর্ড চেয়ারম্যানের এই কথাগুলো রতন টাটার বুকে তীরের মতো লেগেছিল।
বিল ফোর্ডে’র কথা বিনয়ের সাথে শুনে মনে মনে একটা বড় সিদ্ধান্ত নেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অপমানিত হওয়ার পর, রতন টাটা গাড়ি বিভাগ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন এবং বিল ফোর্ডকে এমন একটি পাঠ শেখান, যা তিনি আশা করেননি। টাটা তার অপমানের পরেও শান্ত ছিলেন এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখাননি। একই রাতে তিনি মুম্বাই ফিরে আসেন।
তিনি কখনই এই অপমানের কথা কারও কাছে উল্লেখ করেননি, তবে কোম্পানির গাড়ি বিভাগকে দুর্দান্ত উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তার সম্পূর্ণ মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছিলেন। তার কঠোর পরিশ্রম ফলপ্রসূ হয় এবং প্রায় নয় বছর পর অর্থাৎ ২০০৮ সালে, তার টাটা মোটরস বিশ্বব্যাপী বাজারে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। এবং কোম্পানিটি ৯টি গাড়ি নিয়ে ওয়েস্ট সেলিং বিভাগে শীর্ষে ছিল।