মানুষ কোনো খাবারের প্রতি অনুরাগী হোক বা না হোক ‘বিরিয়ানির’ প্রতি অনুরাগী আমরা সকলেই। যার স্বাদ-সুগন্ধি আপন করে নিয়েছে কোটি কোটি বিশ্ববাসীকে। আমাদের দেশে বিরিয়ানি প্রথম দিল্লি ও লখনও-এ চালু হলেও আজ প্রতিটি শহরের অলিতে-গলিতে বিরিয়ানির দোকান।
বিরিয়ানি দোকানের 100 মিটারের মধ্যে এসে পড়লেই আমাদের নাকে চলে আসে বিরিয়ানির সুগন্ধি। আর দূর থেকেই চোখে পড়ে লাল কাপড় জড়ানো বিশাল হাঁড়ি। বিরিয়ানির প্রতি অনুরাগীরা আরও এক বার বিরিয়ানির স্বাদ গ্রহনের সুযোগ হাত ছাড়া করে না। আমরা খাওয়ার মালিক খেয়ে নিই, কিন্তু এক বারো কি কেউ ভেবে দেখেছি বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল রঙের কাপড়ই কেন? আপনাদের মনেও হয়তো এই রকম প্রশ্নঃ এসেছে, হলুদ বা নীল বা আরও বিভিন্ন কালার থাকতেও বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল কাপড়ই কেন জড়ানো থাকে? তবে আমরা আপনাকে জানাতে চলেছি এর পিছনে রয়েছে এক বিশেষ রহস্য। চলুন জানা যাক:
হ্যাঁ বন্ধুরা, মটন বিরিয়ানি হোক বা চিকেন বিরিয়ানি, প্রায় সব দোকানেই বিরিয়ানির হাঁড়িটা লাল কাপড়েই প্যাচানো থাকে। জানিয়ে রাখি, এই লাল কাপড়ের পিছনে রয়েছে এক ঐতিহাসিক কারণ। আসলে সম্রাট হুমায়ূনের অতিথি আপ্যায়নের রীতি অর্থাৎ ‘দরবারী রীতি’ অনুসরণ করেই আজও চলে আসছে এই প্রথা। ‘দরবারী রীতি’ অনুযায়ী, রূপলি পাত্রে খাবার গুলোকে লাল কাপড়ে ও চিনামাটি বা অন্য ধাতুর পাত্রের খাবারকে সাদা কাপড়ে ঢেকে অতিথি আপ্যায়ন করা হতো। এরপর থেকেই খাবার পরিবেশনের এই রীতি মুগল দরবারেও অনুসরণ করা হতো। এমনকি অতিথি আপ্যায়নে এই রীতি ও রং লখনও-এর নবাবরাও অনুসরণ করতো।
অনেকেই মনে করেন, এই প্রাচীন রীতি অনুসরণ করেই আজও বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল কাপড় ঢাকার প্রথা চলে আসছে। তবে এই নিয়ে অনেকের মনে সংশয় রয়েছে, অনেকের ধারণা এই প্রাচীন রীতি মেনে নয়, বরং দূর থেকে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এই প্রথা মেনে চলছে বিক্রেতারা। তবে ব্যাখ্যা যায় হোক না কেন, লাল কাপড় জড়ানো বিরিয়ানির পাত্রের প্রতি বিরিয়ানি অনুরাগীদের এক আলাদা ভালোবাসা তা নিয়ে কারও সন্দেহ নাই।