পূর্বে ঝাড়খণ্ডের ‘দেওঘর’জেলার মোহনপুর ব্লকের বাঁকা পঞ্চায়েতের একটি গ্রামের নাম এমন ছিল যে, মানুষ তার নাম নিতে লজ্জা পেত। স্কুল-কলেজে ছেলেমেয়েরা তাদের গ্রামের নাম মুখে আনতে পারতো না। তাদের গ্রামের নাম স্কুল-কলেজ, বন্ধুদের বা অন্যত্র বলতে পারত না। গ্রামের নামটা এমন ছিল যে, লোকে এটা শুনেই ঠাট্টা করত। এই গ্রামের নাম ছিল Bh… Di , যার কারণে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বন্ধুদের কাছে গ্রামের নাম বলতে পারত না, বিদ্রুপের ভয়ে। অবশেষে নতুন প্রজন্ম গ্রামের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং গ্রামসভার গ্রামের নাম পরিবর্তন করা হয়। এখন মানুষ গর্ব করে তাদের গ্রামের নাম নেয়।
জাত ও আবাসিক সনদে এই দেওঘর গ্রামের নাম দেখে মানুষ হাসতে থাকে। বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এই সমস্যাগুলো পরিবর্তন করার জন্য নতুন প্রজন্মের তরুণরা তাদের মনকে তৈরি করে। এবং এই জন্য পঞ্চায়েতের সাহায্য নেয়। বাঁকা পঞ্চায়েতের তৎকালীন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রঞ্জিত কুমার যাদব সমস্ত সরকারি নথিতে গ্রামের নাম পরিবর্তনের জন্য গ্রামসভার সভা ডেকেছিলেন। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গ্রামের পুরাতন নাম পরিবর্তন করে ‘মাসুরিয়া’ রাখার প্রস্তাব গৃহীত হয়।
সব সরকারি দফতরসহ নথিপত্রে ও এখন রাজস্ব দফতরের ওয়েবসাইটেও মাসুরিয়া গ্রামের নাম নিবন্ধন করা হয়েছে। এখন গ্রামের নাম বলতে লজ্জা নেই, এখন এই গ্রামের নতুন নাম দিয়ে মানুষ তাদের জমির খাজনাও আদায় করে। সার্কেল অফিসের রাজস্ব গ্রামের পাশাপাশি থানা ও ব্লক অফিসের রাজস্ব গ্রামের তালিকায় মাসুরিয়ার নাম ঢুকেছে। এখন ব্লক অফিস থেকে যে উন্নয়ন পরিকল্পনা চালানো হচ্ছে তাও মাসুরিয়ার নামে করা হচ্ছে।
গ্রামপ্রধান কর্তৃক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, বাঁকা পঞ্চায়েতের তৎকালীন প্রধান রঞ্জিত কুমার যাদব বলেছেন যে, ‘পুরানো পুস্তিকাটিতে গ্রামের নাম আপত্তিজনক ছিল। বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগে শিক্ষার্থীদের গ্রামের পুরনো নাম লিখতে সমস্যা হচ্ছিলো। বিশেষ করে মেয়েরা স্কুল-কলেজে গ্রামের নাম বলতে লজ্জা পেত। এখন গ্রামসভার মাধ্যমে সমস্ত সরকারি নথিতে গ্রামের পুরোনো নাম পরিবর্তন করে মাসুরিয়া করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনাও এখন মাসুরিয়ার নামে বরাদ্দ করা হয়েছে’।