আমাদের চারপাশের এমন অনেক মানুষই আছেন যাদের জীবনের গল্প সংগ্রামে ভরপুর। অনেকের কাছে কিছুটা সিনেমার গল্প মনে হলেও এটাই বাস্তবতা। এমনই মধ্যপ্রদেশের এক ব্যক্তির গল্প, যিনি দারিদ্রের সঙ্গে সংগ্রাম করে বড় হয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিক সাফল্যও পাননি তিনি। টানা ৪ বার ব্যর্থ হলেও অবশেষে মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলার অমরপাটনের বাসিন্দা “শিবকান্ত কুশওয়াহা” (Shibkanta Kushwaha)। একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা শ্রমিকের কাজ করতেন। বাড়ির আর্থিক অবস্থা একদমই ভালো ছিল না। কোনো ভাবে দুবেলা খাবারের ব্যবস্থা হত তাদের। ছোটবেলা থেকেই শিবকান্ত পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলেন।
ছেলের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেখে মা তাকে বিচারক বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন। লেখাপড়া চলা কালীন তার ওপর ভেঙে পড়ে দুঃখের পাহাড়। ২০১৩ সালে তার মা মারা যান। শিবকান্তের জন্য মায়ের বিচ্ছেদ মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু মা তার জন্য যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, শিবকান্ত যে কোনও মূল্যে এটি সম্পূর্ণ করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। বাড়ির আর্থিক অবস্থা খারাপ দেখে পড়াশুনার পাশাপাশি রোজগার করতে শুরু করেন তিনি।
পড়ালেখার সময় তাকে অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তিনি অমরপাটনের সর্দার প্যাটেল স্কুল থেকে ইন্টারমিডিয়েট শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর ভর্তি হন অমরপতন সরকারি কলেজে। স্নাতক শেষ করার পর, তিনি ঠাকুর রণমত সিং মহাবিদ্যালয় থেকে এলএলবি সম্পন্ন করেন। এরপর শিবকান্ত আদালতে প্র্যাকটিস করার পাশাপাশি সিভিল জজের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।
কিন্তু একবার নয়, চারবার তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। তা সত্ত্বেও পিছপা হননি শিবকান্ত। ক্রমাগত ব্যর্থতার মাঝে বিয়েও করেন তিনি। তার স্ত্রী অনেক সহযোগিতা করেছেন বলে জানা যায়। তিনি একটি প্রাইভেট স্কুলেও পড়াতেন। শেষ পর্যন্ত, স্ব-অধ্যয়নের ভিত্তিতে, তিনি কোনো কোচিং ছাড়াই সিভিল জর্জ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ওবিসি কোটায় গোটা রাজ্যে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন তিনি।