আজকের দিনের মেয়েরা কি না করতে পারে। সংসার সামলানো থেকে প্লেন চালানো, মহাকাশ যাত্রা সবেতেই পারদর্শী মেয়েরা। তবে একটা সময় এমনও ছিল, যখন মেয়েদের অভিশাপ বলেও মনে করা হত। তবে বর্তমান সময় অনেক বদলে গিয়েছে, সব কাজেই মেয়েদের এগিয়ে আসতে সাহায্য করেছে।
তবে মেয়েদের কোন কিছু করতে গেলে কিছুটা বেগ পেতে হয়। ছেলেদের মত সহজেই তাঁদের সব কাজে শুরুতেই উৎসাহ দেওয়া হয় না। আবার অনেকে এমনও আছেন, যাদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করে পরিবার পরিজনরাই।
সেরকমই একজন হলেন শালিনী অগ্নিহোত্রী (Shalini Agnihotri)। বাবা পেশায় দরিদ্র বাস কন্ডাক্টর হলেও, ছেলে মেয়ের মধ্যে পার্থক্য না করে শালিনীকে পড়াশোনা শিখিয়েছেন। হিমাচল প্রদেশের উনা জেলার এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও, আজকের দিনে আইপিএস হয়ে দেখিয়েছেন শালিনী অগ্নিহোত্রী (Shalini Agnihotri)। নিজের পাশাপাশি পরিবারের নামও উজ্জ্বল করেছেন তিনি।
ছোট থেকেই পড়াশুনায় খুব ভালো ছিল শালিনী অগ্নিহোত্রী (Shalini Agnihotri)। ধর্মশালার ডিএভি স্কুল থেকে হাইস্কুল এবং ইন্টারমিডিয়েট করেছেন শালিনী। এরপর প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি পালামপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। তারপরই আইপিএস অফিসার প্রবল ইচ্ছা জেগে ওঠে তাঁর মধ্যে।
বিষয়টা হল, ইচ্ছাটা ছোট থেকেই ছিল শালিনীর মধ্যে। পালামপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর তিনি জানতে পারেন যে একজন ব্যক্তি UPSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আইপিএস অফিসার হতে পারেন। আর তারপর থেকেই UPSC পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন শালিনী। তবে বাবা মাকে কিছু না জানিয়েই পরীক্ষায় বসেন তিনি এবং উত্তীর্ণ হয়ে তারপর সবতা জানান।
এই বিষয়ে বলতে গিয়ে শালিনী জানান, ছোট বেলায় একবার সে তাঁর মায়ের সঙ্গে বাসে করে কোথাও যাচ্ছিলেন। কিন্তু বাসে একজন নেশাগ্রস্থ লোক তাঁর মায়ের সিটে বারবার হাত রাখায় তাঁকে তাঁর হাত সরিয়ে নিতে বলা হয়। কিন্তু হাত সরিয়ে নিতে বললেই, শালিনীর মাকে লোকটি মারধর করছিল।
সেই মুহূর্তে শালিনী তাঁর মাকে বলেন, তুমি কমিশনার, তোমার কথা মানতেই হবে। ছোট বেলা থেকেই শালিনী জানতেন কমিশন খুব বড় পদের কোন অফিসার হবেন। তাই তিনি সেই সময় ওই কথাটি বলেন। আর সেদিন থেকেই আইপিএস অফিসার হওয়ার প্রবল ইচ্ছা জাগে তাঁর মনে।
শালিনী আরও জানান, শালিনীর প্রতি বিশ্বাস রেখে তাঁকে শুধু পড়াশুনা চালিয়ে যেতে বলতেন তাঁর বাবা মা। শুধু তাই নয়, শালিনীকে ছেলে হতেও শিখিয়েছিলেন তাঁর বাবা মা। সেই কারণে নিজের স্বপ্ন সত্যি করতে ২০১১ সালে প্রথমবার UPSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০১২ সালে ইন্টারভিউ দিয়ে ২৮৫ তম স্থান অধিকার করেন। তারপর তিনি পরিবারকে জানান তিনি আইপিএস অফিসার (IPS officer) হতে পেরেছেন।