খ্যাতির শিখরে পৌঁছেও কীভাবে খুব সাধারণ জীবনযাপন করতে হয়, তার একটি উদাহরণ বিখ্যাত গায়ক “অরিজিৎ সিং” (Arijit Shing)। অনেক মানুষ তার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল। আর সেই কথা আরও একবার বললেন কবি, গীতিকার ও পরিচালক ‘শ্রীজাত বন্দোপাধ্যায়’। শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে শ্রীজাত’র প্রথম ছবি ‘মানবজমিন’। সেই ছবির অরিজিৎ সিংয়ের ‘মন রে কৃষিকাজ জানো না’ গানটি ইতিমধ্যেই প্রশংসিত হয়েছে।
অরিজিৎ সিংয়ের গাওয়া এই রামপ্রসাদী গানটি সঙ্গীতের তালিকায় রাজত্ব করছে। তিনি শ্রীজাতর কথায় প্রথমবার রামপ্রসাদী গান রেকর্ড করলেন। আর এই গানটির রেকর্ডিংয়ের পেছনে রয়েছে একটি গল্প। যা শুনে তার ভক্তরা মুগ্ধ হবেন। সম্প্রতি এই গানটি গাইতে গায়ক মাত্র ১১ টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিচালক। প্রথমে সেই টাকাও তিনি গ্রহণ করতে রাজি ছিলেন না অরিজিৎ। কিন্তু চাপের মুখে সেই ১১ টাকা নিতে রাজি হন তিনি।
তিনি তার প্রাপ্য টাকার বাকি অংশ শিশুদের স্কুলে দান করার কথা বলেছেন। শুনে সবাই হতবাক। এই প্রসঙ্গে পরিচালক বলেন, “গানটি গাওয়ার পর তাকে পারিশ্রমিকের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন না, আমি তোমার কাছ থেকে পারিশ্রমিক নেব না। আমি বলি না তোমায় টাকা নিতে হবে ভাই। তখন উত্তর এল, ‘আচ্ছা, এক কাজ কর, উৎসবের উদ্বোধনে আমি কলকাতা যাচ্ছি, তুমি আমাকে ১১ টাকা দাও।
আমি বললাম, দেখো এই গানটি সনি এন্টারটেইনমেন্ট কিনেছে, আর অরিজিৎ সিং ১১ টাকা নিয়েছেন তা চুক্তিতে বলা যাবে না। এমন সময় অরিজিৎ বললেন, ‘ঠিক আছে শ্রীজাত দা, আমি একটা বাচ্চাদের স্কুল চালাই, তাই তুমি যা দেবে তাতে ওদের পুজোর পোশাক হয়ে যাবে’। উল্লেখ্য যে, অরিজিৎ সিং-এর জীবনদর্শন সব মানুষের থেকে আলাদা। শ্রীজাত একথা অনেকবার বলেছে।
এই দিন তিনি বলেন, ‘অরিজিৎ সিংয়ের জীবনধারা এতটাই সরল যে খ্যাতির এই স্তর বজায় রাখা খুবই কঠিন, প্রায় অসম্ভব। এই কারণেই আমি বলি অরিজিৎ সিংকে দেখা যায়, কিন্তু স্পর্শ করা যায় না। একদিন খুব গরম ছিল। উনি আমার বাসায় এলেন, আমি এসি অন করলাম। তারপর বলল, এসি চালাচ্ছ কেন? অনেক বিল উঠবে! পরিবেশ নষ্ট হবে না? অবশেষে এসি বন্ধ করে দিল অরিজিৎ নিজেই। তারপর বলল, শ্রীজাতদা, তুমি কি ছোট বেলা থেকে এসিতে বড় হয়েছো? তাহলে এখন এসি কেন’?