উত্তরবঙ্গের পূর্ব সিকিম অঞ্চলে দেখা দিয়েছে নাইরোবি মাছির (Nairobi fly) সংক্রমণ। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানিয়েছে, সিকিম মনিপাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (SMIT) ক্যাম্পাসে বেড়ে চলেছে নাইরোবি মাছির প্রকোপ। ইতিমধ্যেই এই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রায় 100 পড়ুয়া আক্রান্ত হয়েছে ত্বকের এক বিশেষ সংক্রমণে।স্বাস্থ্য দপ্তর এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এই পড়ুয়ারা প্রত্যেকেই নাইরোবি মাছির সংস্পর্শে এসে ছিলেন। যার কারণে আতঙ্কে এলাকাবাসী, এর ব্যবস্থা না নিলে এই মাছি সিকিমের আশেপাশে অঞ্চলে প্রবেশ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কি এই ভয়ঙ্কর মাছি? এর বিশেষত্ব কি?
নাইরোবি মাছির উৎপত্তি পূর্ব আফ্রিকা অঞ্চলে। এই মাছির রং সাধারণত কমলা হয়ে থাকে এবং এটি উচ্চ বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে বেশি দেখা যায়। এই মাছিকে কেনিয়া বা ড্রাগণ মাছিও বলা হয়ে থাকে।
এই মাছি মানুষের শরীরে সংক্রম ঘটায় কিভাবে?
এই মাছি সেইসব পোকামাকড়কে ধ্বংস করে যেগুলো খাদ্যশস্য খেয়ে বেঁচে থাকে। এরা মানুষের সংস্পর্শে এলে শরীরের সংক্রমণ ঘটায়। তবে এরা সরাসরি কামড় বসায় না। এদের দেহে এক ধরনের তরল অ্যাসিড থাকে যা পেডেরিন (Pederin) নামে পরিচিত। এই অ্যাসিড মানুষের শরীরের সংস্পর্শে এলে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মাছির আক্রমনে ক্ষতস্থান সারতে প্রায় দুই সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় লেগে যায়।
এই মাছির হাত থেকে বাঁচার উপায় কি?
এই মাছের হাত থেকে বাঁচতে বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন আসুন জানি!
• নিজেদের ভালোর জন্য রাতে শোবার আগে অবশ্যই মশারী টাঙ্গানো উচিত।
• এই মাছি যদি কোন কারনে শরীরের উপর বসে তাহলে কখনোই হাতে করে চেপে ধরা বা হাত লাগিয়ে সরানো উচিত না। হাত না লাগিয়ে মাছিটিকে সরাতে হবে।
• যদি মাছিটি বসে থাকে তাহলে যে অংশে বসেছিল সেই জায়গাটি খুব ভালো করে সাবান দিয়ে ধুতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে ওই জায়গা ধোয়ার আগে শরীরের অন্য কোন জাগায় যেন না লাগে। তাহলে ওই তরল এসিডিটির সংক্রমণ বাড়তে পারে।
• বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই মাছি যদি চোখের উপর বসে তাহলে বেশি ক্ষতিকারক হবে। তাই খেয়াল রাখতে হবে কোন কারনে যেন চোখের ওপর এই মাছি না বসে।
সিকিম ছড়া ভুটানের কিছু অঞ্চলে এই মাছির সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ির পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে এই রোগের প্রভাব দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয় চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। শিলিগুড়ির এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন 15 থেকে 20 জন রোগী এসেছেন যারা নাইরোবি মাছি দ্বারা আক্রান্ত।