ভারত’কে (India) নদীমাতৃক দেশ বলা হয়। অনেক বড় বড় নদী রয়েছে ভারতের বুকে। এই নদীর জল মানবজীবনে আশীর্বাদের চেয়ে কম নয়। জলের অপর নাম জীবন। মানব জীবনে জলের গুরুত্ব অপরিসীম। চাষবাস থেকে শুরু করে অন্যান্য ক্ষেত্রে নদীর জল ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করা হয়। তাই নদীকে লাইফলাইন বলা চলে। ভারতবর্ষে নদীকে মায়ের রূপে পূজা করা হয়। বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে গঙ্গা’র মত নদীতে স্নান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এমনটাই শাস্ত্রে উল্লেখ আছে। গঙ্গা বা যে কোন নদীর তীরে অনেক ধর্মীয় কাজকর্ম করা হয়।
তবে জানেন কি, ভারতে এমন একটি নদী রয়েছে যাকে অভিশপ্ত বলে অভিহিত করা হয়। এই নদী নিয়ে মানুষের মনে এমনই ভয় যে, এখানে স্নান করা তো দূরের কথা, মানুষ এর জল পর্যন্ত স্পর্শ করে না। এই নদীর জল স্পর্শ করাও খুব অশুভ বলে মনে করা হয়। এই অভিশপ্ত নদীটি রয়েছে উত্তরপ্রদেশে, এবং এর নাম “কর্মনাশা নদী”। এই নদী অভিশপ্ত হওয়ার পেছনে অনেক পুরনো ধর্মীয় কারণ রয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের এই কর্মনাশা নদীর জল মানুষ স্পর্শ করে না। কর্ম ও নাশা দুটি শব্দের সমন্বয়ে এই নদীর নাম হয়েছে। এর আভিধানিক অর্থ যেটা দাঁড়ায়, কোন কাজ নষ্ট করা বা পণ্ডুল করা। বিশ্বাস করা হয়, কর্মনাশা নদীর জল স্পর্শ করলেই হওয়া কাজও নষ্ট বা খারাপ হয়ে হয়, এবং ভালো কাজও মাটিতে মিশে যায়। তাই মানুষ এই নদীর জল স্পর্শ করে না। কিংবা কোন কাজেও ব্যবহার করে না।
এই নদীটি উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে প্রবাহিত হলেও এর বেশির ভাগই রয়েছে উত্তরপ্রদেশে। ইউপিতে এটি সোনভদ্র, চন্দৌলি, বারাণসী এবং গাজিপুরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বক্সারের কাছে গঙ্গায় মিলিত হয়েছে। কর্মনাশা নদীকে ছোঁয়ার ভয় এমন যে, অনেক আগে যখন এখানে জলের কোনো ব্যবস্থা ছিল না, তখন মানুষ এখানে বসবাস এড়িয়ে চলত। এবং যারা এখানে থাকত তারা এই নদীর জল ব্যবহার না করে ফসল চাষ করতেন।