প্রতিটি দেশ জনসাধারণের জন্য বিশেষ কিছু বা অন্য ধরণের কিছু জিনিস তৈরি করে, যার কারণে তারা অনেক সুবিধা পায়। কিন্তু কখনও কখনও সেই পরিকাঠামো এতটাই অনন্য হয় যে তা কেবল সেই দেশেই নয়, সারা বিশ্বে বিখ্যাত হয়ে ওঠে। এমনই একটি আশ্চর্যজনক সেতু রয়েছে চীনে যার নাম “রিভার হাইওয়ে”। সাধারণত নদী জুড়ে সেতু তৈরি করা হয়, অর্থাৎ তাদের নিচ থেকে নদী বেরিয়ে আসে (নদীর উপর তৈরি সেতু), কিন্তু এই সেতু তাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
আসুন, ব্যাখ্যা করা যাক কেন এমন হয়। নিউজ ওয়েবসাইট অনুসারে, এশিয়ার সবচেয়ে অনন্য অবকাঠামো চীনের হুবেই প্রদেশে নির্মিত হয়েছে। এর নাম রিভার হাইওয়ে। এটি নদীর উপর নির্মিত একটি সেতু যা নদীর ঠিক মাঝখানে নির্মিত। ২০১৫ সালে এই মহাসড়কটি চূড়ান্ত করা হয়। এই সেতুটি জিংশান কাউন্টির গুফুজেন শহরকে সাংহাই এবং চেংডুর মধ্যে নির্মিত হাইওয়ের সাথে সংযুক্ত করেছে, যা চীনের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত।
প্রথমবার এই ব্রিজটি দেখলে আপনার মনে হবে, নদীর মাঝখানে বানানোর কারণ কী, এটি নদীর পাশে সহজেই তৈরি করা যেত। নদীর ঠিক পাশে আগে থেকেই একটি রাস্তা ছিল, তাই আপনি ভাববেন যে সেই রাস্তার উপরেও সেতু তৈরি করা যেত। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নদীর উপর সেতু নির্মাণ সহজ এবং সস্তাও ছিল। যে জায়গায় এই হাইওয়ে তৈরি হয়েছে সেটা পাহাড়ি এলাকা। পাহাড় কেটে মহাসড়ক তৈরি করা, টানেল তৈরি করা, নদীর ধারে বসবাসকারী মানুষদের সরিয়ে দেওয়া এবং সর্বোপরি সেখানকার পশু-পাখির ক্ষতি করা খুবই কঠিন ও সমস্যার ছিল।
টানেলের জন্য পাহাড় কাটাও ছিল একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। প্রকৌশলীরা গবেষণা করে দেখেন, নদীর ওপর সেতু নির্মাণের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হচ্ছে এবং সেই সেতুটিও সস্তায় প্রমাণিত হচ্ছে। সেতুটি ৪.৪ কিলোমিটার লম্বা। এটি তৈরি করতে ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে, তবে এটি জমিতে একটি সেতু নির্মাণের চেয়ে অনেক কম ছিল। এই সেতু ব্যবহার করে গন্তব্যে পৌঁছাতে সময়ও অনেক কম লাগে।