কেমন হবে ISRO-এর গগনযানের ভিতরের দৃশ্য? ভারতীয় মহাকাশচারীরা (Astronaut) পৃথিবীর চারপাশে ঘুরবেন যে যানে করে, তার ভেতরে বসার ব্যবস্থাটা ঠিক কেমন হবে? বাকি সুযোগ সুবিধাই বা কেমন থাকবে? কি ভাবে এবং কোথা থেকেই বা মনিটর বা পাইলটের নিয়ন্ত্রণ হবে?
প্রথমেই জানিয়ে রাখি, গগনযান যাকে বলা হচ্ছে, তার সেই অংশটির নাম হচ্ছে ক্রু মডিউল (Crew Module)। এই যানের মধ্যে বসে ভারতীয় মহাকাশচারীরা ৪০০ কিমি উচ্চতায় একটি নিম্ন কক্ষপথে বসে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরবেন। একাধিক নেভিগেশন সিস্টেম, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, খাদ্য হিটার, খাদ্য সঞ্চয়স্থান, টয়লেট সহ দ্বি-প্রাচীর বিশিষ্ট অত্যাধুনিক কেবিন হল ক্রু মডিউল।
এই ক্রু মডিউলের ভিতরে সজ্জিত থাকবে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম, যা উচ্চ এবং নিম্ন তাপমাত্রা সহ্য করবে। সেইসঙ্গে মহাকাশের বিকিরণ থেকে মহাকাশচারীকে (Astronaut) রক্ষা করবে। বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার আগে মডিউলটি তার নিজস্ব অক্ষে ঘরপাক খাবে, যাতে করে তাপ ঢালের অংশটি বায়ুমণ্ডলের ঘর্ষণ থেকে গাড়িকে রক্ষা করতে পারে। এর ফলে বায়ুমণ্ডল থেকে বেরিয়ে আসার সময় এই যানের ভেতরে থাকা যাত্রীদের কোনরকম সমস্যা হবে না।
এই তাপ ঢাল আবার বায়ুমন্ডলের ঘর্ষণ দ্বারা সৃষ্ট তাপ থেকে রক্ষা করবে। সেইসঙ্গে সমুদ্রে নামার সময় জলের সংঘর্ষে ফলে সেইসময় সৃষ্ট আঘাতকেও রক্ষা করতে সক্ষম হবে। সমুদ্রে স্প্ল্যাশ করার সময় ক্রু মডিউলটির প্যারাসুটগুলি খুলে যাবে এবং নামার সঙ্গে সঙ্গেই ভারতীয় কোস্ট গার্ড বা ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ তাঁদের তুলে নেবে।
বর্তমান সময়ে যে ISRO-র ক্রু মডিউলটি প্রদর্শিত হচ্ছে, সেখানে দুজনের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুই ধরনের মনিটর বসানো হয়েছে, যা এর নেভিগেশন, এভিওনিক্স, প্রপালশন, ল্যান্ডিং, প্যারাসুট খোলা ইত্যাদির নির্দেশনা দিতে সাহায্য করবে। সেইসঙ্গে এই কম্পিউটার কনসোলগুলি মহাকাশচারীদের পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ করতেও সাহায্য করবে।
তবে প্রথমেই এই যানে মানুষ বসবেন না। প্রথমে ক্রু মডিউল (Crew Module)-এ দুটি মানবহীন মিশন সম্পন্ন করা হবে। যাতে করে ভেতরের সমস্ত প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে চলছে কিনা তা দেখে নেওয়া যায়। প্রায় ১৬ মিনিটের মধ্যে নির্ধারিত কক্ষপথে পৌঁছাবে এবং সেখান থেকে সমুদ্রে নামতে এই মিশনগুলোর প্রায় ৩৬ মিনিট সময় লাগবে। এই সময়ের মধ্যেই করতে হবে সার্ভিস মডিউল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া, প্যারাসুট খোলা এবং ধীরে ধীরে বঙ্গোপসাগর বা আরব সাগরে অবতরণ।
সৌর প্যানেল মহাকাশে যাত্রার সময় শক্তি সঞ্চয়ের জন্য পরিষেবা মডিউলটি ক্রু মডিউলের নীচে স্থাপন করা হয়। হিউম্যান স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের সিনিয়র বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ক্রু মডিউলটির (Crew Module) ব্যাস 11 ফুট, উচ্চতা 11.7 ফুট এবং ওজন 3735 কেজি। আর এটি এমনসব আধুনিক পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে, যাতে করে অনেক বিস্তারিত তথ্য দেওয়া সম্ভব হয়। তবে মহাকাশচারীদের (Astronaut) নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ২০২৪ সালের পূর্বে এই গগনযানের প্রথম মানব উড্ডয়ন করা হবে না।