Skip to content

তৈরি হয়েছিল ব্রিটিশ বিরোধী পণ্য হিসেবে, ‘বোরোলিন’র এখন ভারতজোড়া খ্যাতি

    বিগত ২০০ বছর ধরে ভারত শাসন করেছে ব্রিটিশরা। এই সময়ে ইংরেজদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখত ভারতবাসী। দেশমাতৃকাকে ইংরেজদের হাত থেকে মুক্ত করতে নানারকম অভিযান চালিয়েছিলেন বিপ্লবীরা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রধান চরিত্র ছিলেন জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী।

    স্বাধীনতার পূর্বে আদিবাসী আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গান্ধীজী বিদেশী পণ্যের ব্যবহার বর্জন করে স্বদেশী পণ্য ব্যবহারের উপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। সেইসময় গান্ধীজীর ধারণায় প্রভাবিত হয়ে ১৯২৯ সালে কলকাতার গৌরমোহন দত্ত একটি ক্রিম চালু করেছিলেন। এই ক্রিম যে কোন ঋতুতেই ব্যবহারযোগ্য ছিল।

    ইংরেজি পণ্যগুলির বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান চালাতে জিডি ফার্মাসিউটিক্যালস নামের একটি সংস্থা ‘বোরোলিন’ (boroline) নামে একটি ক্রিম তৈরি করে। সেই সময় খাদ্য থেকে শুরু করে পানীয়, ভারতের বাজারের সবকিছুই ছিল বিদেশী পণ্যে ভর্তি। তাই সেই সময় গৌরমোহন দত্ত ভারতীয়দের মধ্যে দেশীয় পণ্য ব্যবহারের অনুভূতিকে জাগ্রত করতে চেয়েছিলেন। এমন উদ্দেশ্য নিয়েই ১৯২৯ সালে কলকাতায় প্রথম বোরোলিন চালু করেন তিনি।

    সবুজ নলের মধ্যে সাদা রঙের এই ক্রিম মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে ভারতীয়দের কাছে প্রিয় ক্রিম হয়ে ওঠে। ত্বকের যে কোন সমস্যা থেকে শুরু করে কাটাছেঁড়া সবকিছুতেই উপশম এই মলম। তবে আশ্চর্য্যের বিষয় হচ্ছে সেই ১৯২৯ সাল থেকে ২০২২ সালে দাঁড়িয়ে বোরোলিনের জনপ্রিয়তাকে হার মানাতে পারেনি কোন ক্রিম।

    জানা যায়, স্বাধীনতার আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট বিনামূল্যে ১ লক্ষ বোরোলিন (boroline) বিতরণ করেছিলেন বোরোলিনের নির্মাতা গৌর দত্ত মোহন। শোনা যায়, চলচ্চিত্র অভিনেতা রাজ কাপুর থেকে শুরু করে দেশের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, সকলেই এই ক্রিম ব্যবহার করেছিলেন।

    রিপোর্ট বলছে, অন্যদের থেকে কিছুটা আলাদা ছিলেন গৌর দত্ত মোহন। বোরোলিন তৈরির সূত্র শুধুমাত্র নিজের কাছে লুকিয়ে না রেখে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়াটাকেই নিজের মাহাত্ম্য বলে মনে করেছিলেন তিনি। বোরোলিনে বোরো শব্দটি বোরিক অ্যাসিড থেকে এসেছে, যা এন্টিসেপটিক পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে ল্যাটিন শব্দ ওলিয়ন থেকে এসেছে ওলিন, যার অর্থ তেল। এই দুই শব্দের মিশ্রণে তৈরি হয়েছে বোরোলিন (boroline)।