ভারতে (India) জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রত্যেকেই টাকা অথবা পয়সা ব্যবহার করে থাকে। ভারত সরকারের এই টাকার ক্ষেত্রে বিভিন্ন অংকের নোট বাজারে দেখতে পাওয়া যায়। যার মধ্যে রয়েছে এক টাকা, দুই টাকা, পাঁচ টাকা, দশ টাকা, কুড়ি টাকা, একশো টাকা, পাঁচশো টাকা এবং দু হাজার টাকা। এর পাশাপাশি কিছু কয়েনও ব্যবহার করা হয় ১ টাকা থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। তবে কখনও ‘শূন্য’ টাকার নোট (Zero rupee note) কি দেখেছেন?
শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, বাস্তবে কিন্তু ছিল শূন্য টাকার নোট। ২০১৬ সালের পূর্বে দেশে যেমন ১০০০ টাকার নোটের প্রচলন ছিল, ঠিক তেমন ভাবেই একটা সময় ছিল, যখন দেশে শূন্য টাকার নোট ব্যবহার করা হত। আবার এটাও জানা যায়, দেশে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকার নোটও ছাপানো হয়েছিল।
শূন্য টাকার নোট তৈরির উদ্দেশ্য ছিল দেশের ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি দমন করা। এবার প্রশ্ন আসতেই পারে, কিভাবে শূন্য টাকার নোট তৈরি করে দেশে দুর্নীতি দমন করা যায়? আসল বিষয়টা হল, দেশে দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষের অভাব নেই। গোটা দেশেই কোন না কোন খাতে গেলেই দেখা যাবে কিছু সংখ্যক এমন মানুষ রয়েছেন যারা, হাত পেতে ঘুষ নিতে দ্বিধাবোধ করে না।
এইভাবে দুর্নীতি যখন দেশকে ভেতর থেকে শেষ করে দিচ্ছিল, সেই সময় এই দুর্নীতি বন্ধ করতে ছাপানো হয়েছিল শূন্য টাকার নোট। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নয়, ২০০৭ সালে ভারতের পঞ্চম পিলার এনজিও এই শূন্য টাকার নোট ছাপিয়েছিল। হিন্দি, তেলেগু, কন্নড় এবং মালায়ালাম ভাষায় ছাপানো এই নোটে লেখা ছিল ‘ঘুষ নেব না, দেবও না’।
এই এনজিওর সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা এই নোটগুলো বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, বিমানবন্দর এবং বাজার সর্বত্রই ছড়িয়ে দিয়েছিল। সেইসঙ্গে অধিকার এবং সচেতনতা সম্পর্কিত তথ্য লেখা একটি বইও তারা বিলি করেছিল। এই নোটে ছাপানো হয়েছিল বেশ কয়েকটি শ্লোগানও। যেখানে লেখা ছিল, ‘দুর্নীতি দূর করুন’, ‘কেউ ঘুষ চাইলে এই নোটটি ধরিয়ে দিন এবং এই বিষয়টি আমাদের বলুন’, ‘ঘুষ নেব না, দেবও না’র মত বাক্য।