ভারতীয় রেল (Indian Rail) প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষকে তাদের গন্তব্যে নিয়ে যায়। অফিসে যাওয়া হোক, শহর থেকে গ্রামে যাওয়া বা দীর্ঘ ভ্রমণে যাওয়া হোক, এই সমস্ত চাহিদা পূরণে রেল একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই রেলপথ ভারতীয় জনগণের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। তবে আপনার জানা আছে কি, প্রতি কিলোমিটার রেল ট্র্যাক স্থাপনের জন্য কত টাকা ব্যয় হয়?
ট্র্যাক স্থাপনের খরচ জানার আগে, এর প্রস্তুতি কীভাবে করা হয় তা জেনে নেওয়া যাক। ট্র্যাকগুলি দেখে প্রথমেই যে কথাটি মাথায় আসে তা হ’ল ইস্পাতের তৈরি হওয়ার পরেও কেন এটিতে মরিচা পড়ে না। যদিও এটি সবসময় খোলা আকাশের নিচে এবং অক্সিজেন ও আর্দ্রতার সংস্পর্শে থাকে। রেলের ট্র্যাক তৈরীতে একটি বিশেষ ধরনের ইস্পাত ব্যবহার করা হয়।
এই ট্র্যাক তৈরীর জন্য ইস্পাতের সঙ্গে একপ্রকার স্টিল মিশ্রিত হয়। এটি ম্যাঙ্গানিজ ইস্পাত নামে পরিচিত। এটি এমন একটি ইস্পাত যে অক্সিজেন এবং আর্দ্রতার সংস্পর্শে আসার পরেও এটির উপর কোনও প্রভাব পড়ে না। এবং এটি দীর্ঘদিন ধরে মরিচা মুক্ত থাকে। এখন প্রশ্ন হল, এক কিলোমিটার দীর্ঘ ট্র্যাক তৈরীতে কত খরচ হয়? রেললাইন বিছানোর খরচ নির্ভর করে যে স্থানে স্থাপন করা হচ্ছে তার ওপর।
উদাহরণস্বরূপ, পাহাড়ি এলাকায় রেললাইন স্থাপনে সাধারণত গড়ের চেয়ে বেশি খরচ হয়। অবস্থান ছাড়াও রুট ও প্রযুক্তি ব্যবহারেও খরচ বেড়ে যায় বহুগুণ। এছাড়া ট্র্যাক তৈরিতে ব্যবহৃত স্টিলের ওজনের ওপরও খরচ নির্ভর করে। ট্র্যাকের ওজন যত বেশি, খরচও ততো বাড়তে থাকে। গড়ে, এক মিটার দৈর্ঘ্যের একটি একক ট্র্যাকের ওজন ৪৫ কেজি পর্যন্ত।
বর্তমানে ভারতে যে রেললাইন বসানো হচ্ছে, তাতে এক কিলোমিটার সমতল ভূমিতে বিছানোতে খরচ হয় ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা। অবস্থান উঁচু বা নদীর ওপরে হলে ব্যয় আরও বাড়ে। একই সঙ্গে হাইস্পিড রেল করিডরের এক কিলোমিটার দীর্ঘ ট্র্যাক বসাতে খরচ হয় ১০০ থেকে ১৪০ কোটি টাকা। হাই স্পিড রেল করিডর মানে, এমন একটি রেললাইন যার উপর দিয়ে বুলেট ট্রেন চালানো যায়। বর্তমানে দেশের মুম্বাই ও আহমেদাবাদ শহরে হাই স্পিড রেল করিডর তৈরি করা হচ্ছে।