Skip to content

বাসন ধোয়া থেকে জীবনের শুরু, বছরে ৩০ কোটি টাকার টার্নভার হয় ‘ধোসা কিং’র

    জীবনের লক্ষ্য স্থির থাকলে, হাজারো বাধাও যে মানুষকে আটকাতে পারে না, সেকথা আবারও প্রমাণিত হল। প্রকৃত বিষয় হল, মানুষের মনের অদম্য ইচ্ছা। মনের ইচ্ছাই বড় শক্তি মানুষের। মন থেকে কিছু করার চিন্তা ভাবনা থাকলে, শত বাধাও সহজেই পেরিয়ে যাওয়া যায়, তা প্রমাণ করলেন ‘ধোসা কিং’ (Dosa king)।

    ১৯৭৩ সালে তামিলনাড়ুর তুতিকোরিন জেলার নাগালপুরমে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রেম গণপতি (Prem Ganpati)। সাত ভাইবোন এবং বাবা মাকে নিয়ে ছিল তাঁদের সংসার। অভাবের সংসারে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়শুনা করার পর উচ্চশিক্ষা লাভ করার সুযোগ হয়নি তাঁর। সংসারে সকলের মুখে অন্নের যোগান দিতে, বেছে নিয়েছিলেন অর্থ রোজগারের পথ।

    প্রথম জীবনে অনেক কষ্টে ২৫০ টাকা রোজগার করার পর ১২০০ টাকা বেতনের বিনিময়ে তিনি মুম্বাই যাওয়ার প্রস্তাব পান। কিন্তু সেইসময় বাড়ি থেকে তাঁকে মুম্বাই যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ায়, না জানিয়েই বাড়ি ছেড়ে মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন প্রেম। কিন্তু ভাগ্য সহায় না থাকায়, সেই ব্যক্তি তাঁকে ঠকিয়ে ২০০ টাকা চুরি করে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

    এই পরিস্থিতিতে ভিনরাজ্যে গিয়ে বিপাকে পড়েন প্রেম গণপতি। বাড়ি ছেড়ে চলে আসায়, বাড়ি ফিরতেও তাঁর দ্বিধা হয়। সেই মুহুর্তে বাড়ি না ফিরে সে নাহিমের একটি বেকারিতে ১৫০ টাকা বেতনের বিনিময়ে বাসন ধোয়ার কাজ শুরু করেন। সারাদিনের কাজের পর রাতে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়তেন প্রেম।

    এইভাবে দুবছর কাটার পর আরও বেশি অর্থ উপার্জনের লক্ষ্য স্থির করলেন প্রেম। ১৯৯২ সালের মধ্যে বেশকিছু অর্থ উপার্জন করে বাশী রেলস্টেশনের সামনে ধোসা-ইডলির (Dosa) দোকান খোলেন প্রেম। ১০০০ টাকা দিয়ে সমস্ত বাসনপত্র কিনে মাসিক ১৫০ টাকায় দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন প্রেম।

    এইভাবে চলতে চলতে ব্যবসা বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রাম থেকে দুই ভাই মুরুগান এবং পরমশিবনকে সেখানে ডেকে নেয় প্রেম। খাবারের গুণগত মান ঠিক রাখার জন্য রান্নার সময় মাথায় টুপি পরতেন এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্নভাবে খাবার তৈরি করতেন প্রেম। যে কারণে অল্প দিনের মধ্যেই প্রেমের দোকান সুখ্যাতি লাভ করে এবং ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করেন প্রেম গণপতি।

    ব্যবসা ভালো চললেও, ট্রেড লাইসেন্স না থাকায় পুরসভার পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার প্রেমের দোকান সিল করে দেওয়া হয়। এরপর ১৯৯৭ সালে ৫০ হাজার টাকা জমা রেখে এবং মাসিক ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি রেস্তোরা খোলেন প্রেম। প্রথমটায় এই রেস্তোরায় ২৬ রকমের খাবার পাওয়া গেলেও, ২০০২ সালের মধ্যে সেখানে ১০৫ ধরণের ধোসা (Dosa) পাওয়া যেত। ২০০৩ সালের প্রথম ফ্র্যাঞ্চাইজি আউটলেটটি থানের ওয়ান্ডার মলে ‘ধোসা প্লাজা’ খোলার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। নিউজিল্যান্ড, দুবাই ও ওমানেও পাওয়া যায় প্রেমের ধোসা। এই মুহূর্তে দেশে-বিদেশে প্রায় ৭০টি আউটলেট রয়েছে ‘ধোসা প্লাজা’র। এই মুহূর্তে ৭০ টি আউটলেট রয়েছে এবং বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকার টার্নওভার হয় ‘ধোসা প্লাজা’র।

    Discover more from Entertainment News in Bengali, Latest Tollywood and Bollywood news in Bangla

    Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

    Continue reading