আমাদের দেশে এমন অনেক জায়গা আছে, যেগুলোর কথা খুব কম মানুষই জানে। তেমনই একটি জায়গা হল ধনুশকোডি। ধানুশকোডি ভারতের তামিলনাড়ুর পূর্ব উপকূলে রামেশ্বরম দ্বীপের তীরে অবস্থিত। একে ভারতের শেষ প্রান্তও বলা হয়। এটি সেই জায়গা যেখান থেকে শ্রীলঙ্কা দেখা যায়। এই জায়গাটা আগে যে জনশূন্য ছিল তা নয়। এক সময় এখানে বহু মানুষের বসবাস ছিল। কিন্তু এখন এই জায়গাটি জনশূন্য।
ধানুশকোডি ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে অবস্থিত। যা দুই দেশের মধ্যে একমাত্র পার্থিব সীমানা যা পল্ক স্ট্রেটে বালির স্তূপের উপর বিদ্যমান। এবং এর দৈর্ঘ্য মাত্র ৫০ গজ। এই কারণে এই স্থানটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট স্থানটিকে হিসাবে বিবেচনা করা হয়। মানুষ দিনের বেলায় এই বিশেষ স্থানটি দেখতে আসে। কিন্তু রাত নামার আগেই সবাইকে ফেরত পাঠানো হয়। কারণ রাতে এখানে ঘোরাঘুরি করা একেবারেই নিসিদ্ধ।
সন্ধ্যার আগেই মানুষ রামেশ্বরমে ফিরে আসে। ধানুশকোডি থেকে রামেশ্বরম পর্যন্ত রাস্তাটি ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং অত্যন্ত নির্জন। এখানে যে কেউ ভয় পেতে পারে। কারণ এই এলাকাটি অত্যন্ত রহস্যময় বলে বিবেচিত হয়। এমনকি অনেকে এই জায়গাটিকে ভুতুড়ে বলে মনে করেন। ১৯৬৪ সালের বিপজ্জনক ঘূর্ণিঝড়ের আগে, ধনুশকোডি ভারতের একটি দুর্দান্ত পর্যটন কেন্দ্র ছিল।
সেই সময়ে ধনুশকোডিতে রেলস্টেশন, হাসপাতাল, গির্জা, হোটেল এবং পোস্ট অফিস তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ১৯৬৪ সালে আসা ঘূর্ণিঝড় সব শেষ করে দেয়। এই সময় শতাধিক যাত্রী বহনকারী একটি ট্রেন সাগরে ডুবে যায় বলে জানা গেছে। এরপর থেকে এই স্থানটি জনশূন্য হয়ে পড়ে। কথিত আছে যে ধনুশকোডি সেই জায়গা যেখানে সমুদ্রের উপরে রাম সেতু নির্মাণ শুরু হয়েছিল।
খবর অনুযায়ী, এই স্থানে ভগবান শ্রী রাম হনুমানকে একটি সেতু নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন যেখান দিয়ে বানর বাহিনী লঙ্কায় প্রবেশ করতে পারে। আজও ধনুশকোডিতে ভগবান রামের সাথে সম্পর্কিত অনেক মন্দির রয়েছে। কথিত আছে ভগবান রাম বিভীষণের অনুরোধে তার ধনুকের এক প্রান্ত দিয়ে সেতুটি ভেঙে দিয়েছিলেন। এই কারণে এর নাম ধানুশকোডি। কামালে কোটি মানে মাথা। তাই এর নামকরণ করা হয়েছে ধানুশকোডি।