বর্তমানে ক্রেডিট কার্ডের (Cradit Card) প্রবণতা অনেক বেড়ে গেছে। একভাবে, এটি মানুষের আর্থিক ব্যবস্থাপনার একটি অংশ হয়ে উঠেছে। আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকলেও আপনার শখ পূরণ বা শপিং করার জন্য আপনাকে অন্য কারো কাছ থেকে ঋণ নিতে হবে না। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটার জন্য অনেক ধরনের অফার, ডিসকাউন্ট, কুপন, রিওয়ার্ড পয়েন্ট ইত্যাদি পাওয়া যাচ্ছে।
যারা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন তাদের কিছু বিষয়ের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে একটি ছোট ভুলও আপনাকে মূল্য দিতে পারে, এবং আপনাকে ঋণের বোঝার নিচে ঠেলে দিতে পারে। আলোচ্য বিষয়ে বলা হচ্ছে, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার সময় কী কী ভুল করা উচিত নয় এবং কী কী বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত।
1. নগদ লেনদেন এড়িয়ে চলুন
অনেক সময় এমন পরিস্থিতি আসে যখন আপনার নগদ টাকার প্রয়োজন হয় কিন্তু অ্যাকাউন্টে টাকা থাকে না। এই ক্ষেত্রে, ক্রেডিট কার্ড থেকে নগদ টাকা উত্তোলন করেন, কিন্তু এটা করবেন না। অনেক ব্যাংক এর জন্য ২.৫ থেকে ৩% চার্জ করে। শুধু তাই নয়, আপনার তোলা নগদেও সুদ নেওয়া হয়, যা প্রতি মাসে প্রায় ৩.৫% বা তার বেশি হতে পারে। আপনি নগদ উত্তোলনে ‘সুদমুক্ত সময়কাল’ও পাবেন না, এর অর্থ হল আপনি নগদ তোলার সাথে সাথে আপনাকে এই চার্জগুলি দিতে হবে। আপনি যদি এই নগদ সময়মতো পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে এই পরিমাণ বাড়তে থাকে।
2. ক্রেডিট কার্ডে ঋণ নেওয়ার ভুল
অনেক সময় আপনি ক্রেডিট কার্ডে লোনের অফার পান। এই ধরনের অফার ব্যাঙ্ক থেকে কল/মেসেজে আসতে থাকে। তবে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। ক্রেডিট কার্ডে নেওয়া ঋণে ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণের তুলনায় বেশি সুদ দিতে হয়। তাই সুদের হার তুলনা করেই ঋণ নেওয়ার কথা ভাবা উচিত।
3. ট্র্যাক বিলিং চক্র
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার সময়, আপনার বিলিং চক্রের যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, বেশিরভাগ ব্যাঙ্ক যেকোনো লেনদেনে ২০-৫৫ দিনের সুদমুক্ত সময় দেয়। ক্রেডিট কার্ডে সবসময় দুটি তারিখ মাথায় রাখুন, প্রথম স্টেটমেন্টের তারিখ এবং দ্বিতীয় ডেট। বিবৃতি তৈরির পর যেকোনো লেনদেন পরবর্তী বিল চক্রে যোগ করা হবে।
বিলিং চক্র প্রতি মাসের ৪ তারিখ থেকে পরের মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই সময়ের মধ্যে আপনাকে অর্থ প্রদান করতে হবে। আপনি যদি এই সময়ের মধ্যে অর্থ প্রদান না করেন, তাহলে ৩৫-৪৫% পর্যন্ত বার্ষিক সুদ দিতে হবে। আর একটি বিষয়, যদি আগের মাসের বকেয়া পরিশোধ না করা হয়, তাহলে আপনি পরবর্তী কোনো লেনদেনে সুদমুক্ত সময় পাবেন না।
4. ক্রেডিট কার্ডের সীমা পর্যন্ত ব্যয় করুন
প্রায়শই লোকেরা তাদের সিবিআইএল স্কোর বাড়ানোর জন্য ক্রেডিট কার্ডের সীমা অনুযায়ী অর্থ উত্তোলন করে, এমনকি যখন এটি প্রয়োজন হয় না বা বেশি খরচ করে। যখন বিল পরিশোধের কথা আসে, অনেক সময় তাদের কাছে এত টাকা থাকে না। এমতাবস্থায় বিলে অতিরিক্ত সুদ যোগ হলে তাদের ওপর ঋণের বোঝা বাড়ে। এমন ভুল আপনার একদমই করা উচিত নয়।
5. নো-কস্ট ইএমআই
ইএমআই-তে যে কোনও বড় খরচ করার সুবিধা রয়েছে। কিন্তু ক্রেডিট কার্ডে ইএমআই করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা খুবই জরুরি। উদাহরণস্বরূপ, আপনাকে ইএমআই-এর জন্য একটি প্রসেসিং ফি দিতে হবে। নো-কস্ট ইএমআই প্রক্রিয়াকরণ ফি এবং সুদ জড়িত নয়, আপনি শুধু পণ্যের মূল্য পরিশোধ করুন। তবে এটি একেবারে বিনামূল্যে, এটি সেরকম নয়। অনেক সময় পণ্যের দামের সাথেই সুদ যোগ হয়। তাই ইএমআই করার সময়, আপনার ব্যাঙ্ক থেকে এই সমস্ত জিনিস আগে থেকেই বুঝে নিন।