বর্তমান সময়ে মানুষ চাকরী অপেক্ষা ব্যবসাকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। অন্যের কাছে চাকরী করার থেকে নিজের ব্যবসাকি অনেকের পছন্দ। যেখানে লাভের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকছে। তবে প্রথমে সকলেই চায়, কম খরচে একটা লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে।
আপনি যদি নতুন কোন ব্যবসা শুরু করতে চান, তাহলে মুক্তা (pearl) চাষ শুরু করতে পারেন। সঠিক ভাবে এই চাষ করতে পারলে, ১০ গুণ মুনাফা পাবেন আপনি। মাত্র ৩০ হাজার টাকা ব্যয় করে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
খুব কঠিন এবং শ্রমসাধ্য কাজ হল মুক্তা চাষ। প্রথমে একটি পুকুর খনন করতে হবে আপনাকে। তারপর সেখানে অনেক জল সংগ্রহ করতে হবে আপনাকে। তারপর ঝিনুকগুলোকে ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে জালে বেঁধে পুকুরে ফেলে রাখতে হবে, যাতে সেগুলো জলের ভিরতে নিজেদের থাকার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে পারে।
১৫ দিন হয়ে গেলে ডুবিয়ে রাখা ঝিনুকগুলো বের করে তাতে একটি চিরা তৈরি করে ভেতর থেকে ঝিনুকগুলোকে একটু আঁচড়ে নিয়ে চালনির ভিতরে একটি স্তর তৈরি করতে হবে। এই অংশটিই মুক্তা তৈরিতে সাহায্য করে। এই শাঁসগুলি আবার জলে ছেড়ে দিয়ে মুক্তা তৈরি হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর এই সময়টা জলের যত্ন নিতে হবে। জল খারাপ থাকলে, মুক্তা (pearl) তৈরি হতেও অনেক বেশি সময় লেগে যাবে।
এরপর কয়েকদিনের মধ্যেই পুকুরের জলে মুক্তা তৈরি হয়ে যাবে। এক একটি ঝিনুক থেকে দুটো করে মুক্তা তৈরি হবে। এই এক একটি ঝিনুক তৈরি করতে আপনার খরচ পড়বে প্রায় ২৫ থেকে ৩৫ টাকা। আর বাজারে এক একটি মুক্তার দাম প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি তাঁর পুকুরে ১০০০ টি ঝিনুক রাখেন, তাহলে প্রায় ২০০০ টি মুক্তা তৈরি হবে। তবে সব ঝিনুক না বাঁচলেও, ৬০০ থেকে ৭০০ টি ঝিনুক বেঁচে থাকে। আর তাঁর থেকে তৈরি হওয়া মুক্তা বিক্রি করে ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা উপার্জন করা সম্ভব হবে।
জানিয়ে রাখি, একবার পুকুর কাটলেই, তাতে বারবার মুক্তা চাষ করা যায়। আর আপনার যদি এই কাজ শুরু করতে অর্থের সংকট দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে সরকার আপনার পুকুর খননের জন্য ৫০ শতাংশ অর্থ দিয়ে সাহায্য করবে। গ্রামের প্রধান বা সচিবের সাহায্য নিয়ে এই অর্থ আপনি পেতে পারেন।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ভারতে এবং বিহারের দারভাঙ্গা জেলায় মুক্তা চাষ সবচেয়ে বেশি হয় এবং এখানকার মুক্তার গুণগত মানও অনেক বেশি হয়। এছাড়া মধ্যপ্রদেশের হোশাঙ্গাবাদ এবং মুম্বাইতেও মুক্তা (pearl) চাষের প্রশিক্ষণ দিতে হয়।