এই নেটদুনিয়া কখন কে ভাইরাল হয় কেউ বলতে পারেনা। বেশ কয়েক মাস আগে এমনই এক ঘটনা কাচা বাদাম গানকে ইস্যু করে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিলেন, বীরভূমের বাসিন্দা ভুবন কাকু তা আমাদের সকলেরই জানা। আসলে বাদাম বিক্রি করতে করতে ‘কাঁচা বাদাম’ দিয়ে সুর তুলেছিলেন এই ভুবন কাকু। তার এই গান কে কেন্দ্র করে নাচ ও বিভিন্ন ধরনের রিল আমরা সকলেই দেখেছি। তখন থেকেই ভুবন বাদ্যকর সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরাফেরা করছে। কখনো তিনি এসেছেন গান রেকর্ড এর জন্য, কখনো তার রাজপ্রাসাদ, আবার কখনো বা তার ব্যক্তিগত জীবনের জন্য। কিন্তু আজকের প্রতিবেদনে তার আসার কারণ হচ্ছে যাত্রার মঞ্চে এন্ট্রির জন্য।
হ্যাঁ বন্ধুরা, ‘কাঁচা বাদাম’ খ্যাত এই ভুবন কাকুকে এবার যাত্রার মঞ্চে দেখা যাবে। যেখানে তাকে নিয়ে যাত্রার পোস্টার সামনে এসেছে। তিনি রথের আগেই এই কাজের অফার পেয়েছিলেন। যাত্রার নাম ‘খোকাবাবুর খোলাঘর’ এটি ‘শ্রী দূর্গা অপেরার’ যাত্রাপালা। এই যাত্রাপালাটি অনুষ্ঠিত হবে 1 লা জুলাই অর্থাৎ রথযাত্রার দিন। তিনি গ্রামে অনেক যাত্রা দেখেছেন ঠিকই কিন্তু কোনদিন অভিনয় করেননি। এইবার তিনি নিজে যাত্রা অভিনয় করতে চলেছেন এবং এর জন্য প্রস্তুতি তিনি আগে থেকেই চালিয়ে যাচ্ছেন। যা পুরোপুরি নতুন জগতে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন।
যাত্রার অভিনয় নিয়ে এক বৈঠকে ভুবন কাকু বলেছেন, যাত্রাপালা আমার অভিনয় হচ্ছে পিতাজীর চরিত্র। সেইসময় ভুবন কাকু প্রতিবেদককে জিজ্ঞাসা করেন, যাত্রায় আমার অভিনয় করতে কি কোন বাধা আছে তাহলে বলেন। কারণ, এর আগে আমি কোনদিন যাত্রায় অভিনয় করিনি। আমি মনে করি মানুষ হয়ে জন্মেছি যখন আমাদের কাজ করে যেতে হবে। তাই আমি কোন কাজ ছোট ভাবি না। আপনাদের, বাবা-মায়ের ও ভগবানের আশীর্বাদ থাকলে আমি সব কিছুই করতে পারবো।
এরপর ভুবন কাকুকে যাত্রা নির্মতাদের সহযোগিতা ও তার প্রতি ব্যবহার নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এটা শুনে সকলেই খুশি হচ্ছে যে আমি যাত্রায় অভিনয় করতে যাচ্ছি। এই জীবনে আমি রাজমিস্ত্রি, চাষ করা থেকে শুরু করে ব্যবসা অনেক কিছুই করেছি। যাত্রা অভিনয় করতে যাচ্ছি দেখে খুব খুশি হচ্ছি।
তবে এর জন্য তাকে অনেক কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আচমকা ভাইরাল হওয়া এই ভুবন কাকুর প্রসঙ্গে যাত্রা জগতের ‘সুচিত্রা সেন’ কাকলি চৌধুরী মৃদু কটাক্ষ করে বলেছেন, শিল্পীর কোন জাত পাত নয়। এমনই একটা গান হিট হয়েছে বলে তার যাত্রায় অভিনয় করাটা কতটা গ্রহণযোগ্য তা সময়ের অপেক্ষা। অন্যদিকে যাত্রা জগতের ‘উত্তম কুমার’ অনল চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, “আমি খুব হতাশ, যাত্রার অভিনয় এতটা সহজ হয়ে গেল। আমি 38 বছরের যাত্রা জীবনে বুঝে উঠতে পারলাম না যাত্রা এতটা সহজ।” এখন এটাই দেখার ভুবন বাদ্যকর যাত্রা জগতের অভিনয় দর্শকদের কতটা গ্রহণযোগ্যতা করতে পারবে। আমরা এর আগেও দেখেছি মুম্বাইয়ের বড় বড় মঞ্চে তিনি ভালো পারফরম্যান্স করতে পারেনি বলে দর্শক তাকে আর নেননি।