১৯৪৫ সালের ২৪ শে জুলাই মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন আজিম প্রেমজি (azim premji)। মায়নমারে ধানের ব্যবসা ছিল তাঁর বাবা হাসিম প্রেমজির। সেই কারণে তাঁকে বার্মার রাইস কিংও বলা হয়। তবে পরবর্তীতে তাঁরা ভারতের গুজরাটে এসে বসবাস শুরু করেন।
ব্যবসার পাশাপাশি পরোপকারী স্বভাবের জন্যও দেশ ও বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছেন ভারতের বিখ্যাত শিল্পপতি আজিম প্রেমজি। ভারতের শীর্ষস্থানীয় আইটি কোম্পানি উইপ্রোর প্রতিষ্ঠাতা হলেন আজিম প্রেমজি। মনের দিক থেকে তিনি যতোটা বড়, তাঁর হৃদয়ও ঠিক ততোটা বড়।
বাবার চালের ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইটি কোম্পানি উইপ্রো প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। গৌতম আদানি এবং মুকেশ আম্বানির পরে ভারতের তৃতীয় ধনী ব্যক্তি হিসাবে উঠে আসে আজিম প্রেমজির নাম। তবে ভারতে নয়, এশিয়ার মধ্যে এক নম্বরে রয়েছেন তিনি।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হয়ে মাত্র ২১ বছর বয়সেই বাবার লোকসানে ডুবে যাওয়া কোম্পানির দায়িত্ব নেন আজিম প্রেমজি। ১৯৬৮ সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সেই ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া ভেজিটেবল প্রোডাক্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। প্রথমে এই কোম্পানির ব্যানারে উদ্ভিজ্জ তেল ও সাবানের ব্যবসা শুরু করলেও পরবর্তীতে হাইড্রোলিক যন্ত্রাংশ তৈরিও শুরু করেন তিনি।
১৯৭৭ সালে যখন জনতা পার্টি সরকার আইবিএমকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলে, তখন বড় সাফল্য পান আজিম প্রেমজি (azim premji)। এই সময় তিনি কম্পিউটার ক্ষেত্রে প্রবেশের এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন এবং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে ১৯৭৯ সালের শেষের দিকে তা পেয়েও যান। এরপর ১৯৮২ সালে এই কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে তিনি নাম দেন উইপ্রো (Wipro)। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
ব্যাঙ্গালোরেও নিজের ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যান তিনি। উপদেষ্টা নিযুক্ত করেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের অধ্যাপক কে জি রাওকে। উইপ্রো ইনফোটেক প্রতিষ্ঠা করার পর ধীরে ধীরে এই ক্ষেত্রে ভালো নাম করতে শুরু করে। এরপর ১৯৯৫ সালে তিনি আবার ও পড়াশুনা শুরু করেন। তাঁর কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায়ের ফলে এই উইপ্রোর ব্যবসা ১১০ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১৯ সালে আজিম প্রেমজি ফাউন্ডেশনে ৫২৭৫০ কোটি টাকার একটি শেয়ার দান করেছিলেন এবং তা দরিদ্রদের কল্যাণের জন্য ব্যয় করা হয়েছিল।
দেশের সবথেকে বড় দাতাদের মধ্যে একজন হলে আজিম প্রেমজি (azim premji)। মায়ের থেকে এই অনুপ্রেরণা পেয়ে অনবরত দরিদ্রের সেবা করে গেছেন তিনি। শিক্ষা খাতে অনুদান দিয়েছেন ৭.৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ। ২০১১ সালে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত করা হয়।