বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে একটি হল আগ্রার তাজমহল (taj mahal)। সাদা মার্বেল দিয়ে তৈরি এই স্মৃতি সৌধ দেখতে পৃথিবীর দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসেন আগ্রায়। মুঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রী মমতাজের স্মরণে এই শ্বেত পাথরের তাজমহল (taj mahal) তৈরি করলেও, কালো তাজমহলের কথা কিন্তু অনেকেই জানেন না।
শাহজাহানের ইচ্ছা ছিল তাজমহলের (taj mahal) ঠিক পিছনে অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশের যমুনা নদীর ওপারে একটি কালো তাজমহল বানাবেন। আর যেখানে তিনি নিজের সমাধি তৈরি করবেন বলেও জানিয়েছিলেন স্ত্রী মমতাজকে। কিন্তু সেই কালো তাজমহল (black taj mahal) শাহজাহানের কল্পনাতেই রয়ে গেছে। বাস্তবে এটি তৈরি করা যায়নি।
শাহজাহান পুত্র ঔরঙ্গজেবের (aurangzeb) বিষয়ে সকলেই অবগত। ইতিহাস ঘাটলে জানা যায়, অত্যন্ত নিষ্ঠুর একজন শাসক ছিলেন তিনি। অন্যদের উপরই শুধু নয়, নিজের পিতার উপরও নিষ্ঠুরতা দেখিয়েছিলেন তিনি। আর সেই কারণে ১৬৬৬ সালের ২২ শে জানুয়ারি শাহজাহান পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেও, তাঁর শেষ ইচ্ছা পূরণ করেনি পুত্র ঔরঙ্গজেব (aurangzeb)।
জানা যায়, শাহজাহান মারা যাওয়ার পর তাঁর মৃতদেহ কোথায় দফন করা হবে এই বিষয়ে একটি উইল করে গিয়েছিলেন শাহজাহান। সেই মমি বই অনুসারে, তাজমহলের ঠিক পিছনে মেহতাববাগে তাঁকে শমাধিস্থ করার কথা লেখা ছিল। সেই বইয়ে আরও লেখা ছিল, সেখানে যেন আরও একটি তাজমহল তৈরি করা হয়। আর তা যেন সাদা পাথরের না হয়। সেই তাজমহল যেন সম্পূর্ণটাই কালো পাথরের হয় এবং এটি যেন মূল্যের দিক থেকে তাজমহলের সমান হয়।
কিন্তু ঔরঙ্গজেব (aurangzeb) নিজের পিতার জন্য কিছুই করতে চাননি। আর সেই সময় অনেক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার কারণে ঔরঙ্গজেবের কোষাগারও বেশ শূণ্য হয়ে পড়ে। সেই মুহূর্তে ইসলামী আইনের বরাত দিয়ে রাজকীয় উলামায়ে কেরামের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেন। আর বলেন, যদি কোন বিষয় ইসলামের আলোকে সঠিক না হয়, তাহলে তা কি করা উচিত?
এই বিষয়ে ওলামাগণ অসিয়তকে ভুল ব্যাখ্যা করেন এবং ঔরঙ্গজেব বলেন, বাবা শাহজাহান মা মমতাজের প্রেমে পড়েছিলেন বলে তাঁকে মায়ের কাছেই দাফন করা উচিত। ধূর্ততা করে শাহজাহানের স্বপ্নকে নস্মাৎ করে দিয়ে তাঁর কালো তাজমহল তৈরির শেষ ইচ্ছা থেকে বঞ্চিত করেন ঔরঙ্গজেব। যে কারণে শাহজাহানের কালো তাজমহলের (black taj mahal) স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়।