সাফল্য কারো জীবনে সহজেই আসেনা, তার জন্য জীবনে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। দৃঢ় সংকল্প ও উদ্দেশ্য সঠিক রেখে এগোতে পারলে জীবনে সাফল্য আসতে বাধ্য। এই প্রতিবেদনে এক প্রতিভা “অঙ্কিত প্রসাদ” সম্পর্কে কথা বলতে যাচ্ছি, যিনি সবসময় একজন উদ্যোক্তা হতে চেয়েছিলেন। তিনি ঝাড়খণ্ডের একটি ছোট শহর চাইবাসার বাসিন্দা। শুরু থেকেই কম্পিউটার শেখার প্রতি তার খুব আগ্রহ ছিল। এই কারণেই ১৯৯৫ সালে তার বাবা তাকে একটি কম্পিউটার কিনে দেন। এরপর তার পরিবার চলে যায় জামশেদপুরে।
অঙ্কিত এবং তার দুই বছর বয়সী ভাই রাহুল চাইবাসার সরস্বতী বিদ্যা মন্দির থেকে তাদের প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেছেন। দুই ভাই ২০০৫ সালে ওয়েব ডিজাইন শেখার মাধ্যমে কাজ শুরু করেন, এবং তারপর একটি ছোট কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। তার কোম্পানি স্থানীয় রেস্টুরেন্ট, পরিষেবা প্রদানকারী এবং হোটেলের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করত। এই ছোট ব্যবসা ধীরে ধীরে গতি লাভ করে।
তার কিছু সময় পরে তিনি আইআইটি (IIT) সম্পর্কে জানতে পারেন, এবং তার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। দ্বিতীয় চেষ্টায় আইআইটি দিল্লিতে ভর্তি হয়ে অঙ্কিত বলেছেন, ‘আমার ভাই আইআইটি-তে স্নাতক ডিগ্রি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা করতে পারেননি। এমতাবস্থায় আমার বাবা-মায়ের আমার কাছ থেকে অনেক প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু আমার প্রথম প্রচেষ্টাও পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়নি। এরপরে আমি নিজেকে আরেকটি সুযোগ দিয়েছিলাম’।
তারপর অঙ্কিত ২০০৮ সালে IIT দিল্লিতে গণিত এবং কম্পিউটিং-এ ইন্টিগ্রেটেড এমটেক-এ ভর্তি হন। আইআইটি দিল্লিতে ভর্তি হওয়ার পরেও তিনি তার কাজ চালিয়ে যান। ব্যবসার প্রসার ঘটে এবং তারপর তার আয়ও স্থিতিশীল হয়। ২০০৯ থেকে ২০১০ এর মধ্যে অঙ্কিত অনেক স্টার্টআপের সাথে কাজ করেছেন। তারা সফটওয়্যার তৈরি করে সফল হয়েছেন।
অঙ্কিত Flipkart, Snapdeal এবং Zomato-এর সাফল্যে খুব অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। এবং ২০১২ সালে তার ভাইয়ের সাথে তিনি হোস্টেল রুম থেকে ‘টাচ ট্যালেন্ট’ নামে একটি সফ্টওয়্যার তৈরি করেছিলেন। এটি একটি ওয়েব ভিত্তিক বিশ্ব সম্প্রদায় যা ব্যবহারকারীদের শিল্প ও ডিজাইন প্রদর্শন, শেয়ার এবং নগদীকরণ করার সুবিধা দেয়। তারপর আইআইটি দিল্লি থেকে পড়াশোনা ছেড়ে নিজের কোম্পানি শুরু করেন।
তবে তিনি ক্রমবর্ধমান স্মার্টফোন শিল্পে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন। এই কারণেই তিনি ২০১৫ সালে ‘ববল এআই’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যিনি ‘ববল ইন্ডিক’ কীবোর্ড তৈরি করেছেন। এর মাধ্যমে বিশ্বের প্রায় ১২০টি ভাষার সাথে ৩৭টি ভারতীয় ভাষাও কীবোর্ড সমর্থন পায়। তার কোম্পানি ২০১৮ সালে ফোর্বস অনূর্ধ্ব ৩০ তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।