আরব (Arob) দেশগুলোতে “বাজপাখি” (Falcon) শিকার করার প্রথা বহু শতাব্দী ধরে চলে আসছে। বাজপাখি সঠিকভাবে শিকারের জন্য প্রশিক্ষিত। চোখের পলকে, এই বাজপাখি গুলি শিকারের সমস্ত কাজ করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক আরব দেশগুলোতে বাজপাখি’র গুরুত্ব ও ইসলামী ঐতিহ্য। তাদের মতে যদি কোন ব্যক্তি স্বপ্নে বাজপাখি দেখেন তবে এর নিজস্ব অর্থ রয়েছে। যদি কোনও ব্যক্তি স্বপ্নে একটি বাজপাখি দেখেন তবে, তার ছেলে তার সময়ের খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে উঠবে। যদি কোনও ব্যক্তি বাজপাখির কিছু পালক ধারণ করার স্বপ্ন দেখে তবে এর অর্থ হল, কোন শক্তি তার হাতে থাকবে।
যদি একজন রাজা স্বপ্নে একটি বাজপাখিকে তার হাত থেকে উড়তে দেখেন তবে এর অর্থ হল, তার একটি অভ্যুত্থান হবে। যদি স্বপ্নে এমন একটি বাজপাখি দেখা যায় যাকে হত্যা করা হয়েছে তবে এটি একটি খুব খারাপ লক্ষণ হিসাবে বিবেচিত হয়। ইসলামীক মতে এর মানে, রাজা’র মৃত্যু হবে। এটি বিশ্বাস করা হয় যে, আরব দেশগুলিতে ফ্যালকনারির ঐতিহ্য ১৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে। সৌদি, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং অন্যান্য আরব দেশে ‘ফলকনারি’ একটি জনপ্রিয় খেলা।
শেখদের কব্জিতে বসে থাকা বাজপাখিরা সংকেত পেলেই শিকারে ভর করে। বাজপাখি খুবই শক্তিশালী পাখি এবং তারা নিজেদের থেকেও অনেক বড় প্রাণী ও পাখি শিকার করতে পারে। এই বাজপাখিগুলি তাদের শক্ত খপ্পরে হরিণ, খরগোশ, বন্য ছাগল সহ সমস্ত প্রাণী বা পাখিকে আহত করে। যেসব পশু বা পাখি শিকারের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয় তাদের বলা হয় ‘জাওয়ারেহ’। পাখিদের মধ্যে, বাজপাখি প্রায়ই শিকারের জন্য প্রশিক্ষিত হয়। এছাড়াও শিকারী কুকুর, বাঘ, চিতাবাঘ ইত্যাদি পশুদের শিকারের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এই শিকারীরা তাদের মালিকদের জন্য পশু বা বন্য প্রাণী শিকার করে। পারস্যের প্রথম সম্রাট ‘আল হারিস বিন মুয়াবিয়া’কে প্রথম ফকনার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কথিত আছে, তিনি একটি বাজপাখিকে একটি পাখি শিকার করতে দেখেছিলেন। তিনি সেই ঈগলের সৌন্দর্য এবং শিকারী আত্মার প্রেমে পড়েছিলেন এবং তাকে ধরার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে সম্রাট বাজপাখি পালন করেন এবং শিকারের জন্য প্রশিক্ষণ দেন। মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ কুরানে ফকনারিকে ন্যায়সঙ্গত করা হয়েছে।