পৃথিবীতে মায়ের (mother) থেকে বড় যোদ্ধা আর কেউ নেই বলেই মনে করা হয়। সন্তানের সুখের জন্য এক মা নিজের সর্বস্ব উজার করে দিতেও পিছপা হন না। সন্তানের রক্ষার্থে সর্বদা চিন্তামগ্ন থাকেন একজন মা (mother)। বিপদে আপদে সন্তানের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়ায় মা (mother)।
সেরকমই একজন মা হলেন তামিলনাড়ুর (tamilnadu) থুথুকুডি জেলার কাতুনায়াক্কানপট্টি গ্রামের বাসিন্দা পেচিয়াম্মাল। মাত্র ২০ বছরে বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেও, সইল না স্বামী সুখ। কপাল খারাপ থাকায় বিয়ের মাত্র ১৫ দিনের মধ্যেই হার্ট অ্যাটাকে স্বামী মারা যায়।
এরপর বুঝতে পারেন তিনি সন্তানসম্ভবা। সঠিক সময়ে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন, নাম রাখেন শানমুগাসুন্দরী। সেইসময় মেয়েকে বড় করতে গিয়ে সমাজের নানারকম কটুক্তির সম্মুখীন হতে হয় পেচিয়াম্মালকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পিছিয়ে পড়েনি পেচিয়াম্মাল। মেয়েকে বড় করতে চালিয়ে গিয়েছেন সংগ্রাম।
স্বামী মারা যাওয়ার পর একা মায়ের পক্ষে সমাজের কটুক্তি সহ্য করে মেয়েকে বড় করা পেচিয়াম্মালের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে। সেই সময় মেয়ের জন্য এক কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন পেচিয়াম্মাল। মহিলা থেকে নিজের পোশাক বদলে হয়ে গেলেন পুরুষ। কেটে ফেললেন নিজের লম্বা চুল, পড়নের শাড়ি ছেড়ে পড়তে শুরু করলেন শার্ট ও লুঙ্গি। কাজ শুরু করলেন পাশের গ্রামের চা পরোটার দোকানে। সেখানে মহিলা নয়, মুথু মাস্টার নামে পরিচিত হলেন পেচিয়াম্মল।
এরপর ধীরে ধীরে নারকেলের দোকানে কাজ থেকে শুরু করে, ছবি আঁকা, শ্রমিকদের সঙ্গে কাজ করে মেয়েকে ভালোভাবে মানুষ করেন পেচিয়াম্মল। তাঁর এই নতুন রূপে অনেক সমস্যার সম্মুখীনও হতে হয়েছে পেচিয়াম্মলকে। মহিলাদের বদলে পুরুষদের টয়লেট ব্যবহার থেকে শুরু করে, বাসে পুরুষদের সিটে বসে যাতায়াতও করতে হয়েছে তাঁকে।
তবে মেয়ের জন্য নিজের এই জীবন বদলের বিষয়টাকে ভীষণই হালকাভাবে নিয়েছিলেন পেচিয়াম্মল। এই বিষয়ে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা করেননি তিনি। তবে তাঁর এই রূপবদলের বিষয়টা তাঁর গ্রামের কিছু মানুষ জানতেন। বর্তমানে মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন পেচিয়াম্মল। আর এখন তিনি শান্তিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে পারবেন বলেও জানান।