শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বের অনেক দেশেই বহু ধরনের কুসংস্কার, ভ্রান্ত ধারণা, শুভ-অশুভ লক্ষণ ইত্যাদির প্রচলন আছে। বিড়াল সম্পর্কিত কুসংস্কারগুলি এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কোনো কোনো দেশে বিড়ালকে খুব শুভ বলে মনে করা হয়। আবার কোনো কোনো দেশে অশুভ বলে মনে করা হয়। ভারতে বিড়াল সম্পর্কে খুবই উদ্বিগ্ন। যেখানে বিড়াল রাস্তা পার হলে থেমে যাওয়ার কুসংস্কার এখানে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত।
এটি বিশ্বাস করা হয় যে, আপনি যদি কোনও কাজে যাচ্ছেন এবং বিড়াল পথ অতিক্রম করে, তবে আপনার সেই পথ দিয়ে যাওয়া উচিত নয়, অন্যথায় কাজে ব্যর্থতা বা কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। যদিও বিড়াল পথ পাড়ি দিলে থামার এই প্রথা চালু হয়েছিল বিশেষ বৈজ্ঞানিক কারণে। আসুন জেনে নিই এই ভ্রান্ত ধারণার পেছনে বৈজ্ঞানিক কারণ।
প্রকৃতপক্ষে, কয়েক শতাব্দী আগে যখন মহামারী ছড়িয়ে পড়ত, তখন গ্রামগুলি মৃত্যুর ঘুমে তলিয়ে যেত। প্লেগ’ও একটি অনুরূপ রোগ ছিল, যা হাজার হাজার এবং লক্ষাধিক লোককে হত্যা করেছিল। কারণ প্লেগ রোগটি ইঁদুর দ্বারা ছড়িয়ে পড়ে এবং বিড়ালের প্রধান খাদ্য ইঁদুর। এমতাবস্থায়, যে জায়গা থেকে বিড়াল যেতো সেখান থেকে প্লেগ সংক্রমণের আশঙ্কা ছিল।
এটি এড়াতে সে সময় লোকেরা একটি প্রথা তৈরি করেছিল যে যদি একটি বিড়াল পাশ দিয়ে যায় বা একটি বিড়াল রাস্তা অতিক্রম করে তবে তারা কিছুক্ষণের জন্য সেখানে যাওয়া এড়িয়ে যাবে। এরপর থেকে বিড়াল নিয়ে অনেক কুসংস্কার ছড়িয়ে পড়ে এবং বিশ্বাস করা হয় যে বিড়ালের পথ কাটলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, অন্যদিকে এর মূল কারণ ছিল প্লেগ রোগ থেকে বাঁচা।
আরেকটি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে তখন বিদ্যুৎ ছিল না। এমতাবস্থায় রাতে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কোনো পশু পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সন্দেহ হলে মানুষ কিছুক্ষণ থেমে যেত। যাতে ওই ব্যক্তি পশুর কোনো ক্ষতি না করে, এবং সেই প্রাণীটিও ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করতে না পারে। এমন পরিস্থিতিতে শুধু বিড়াল নয় মানুষ যে কোনো প্রাণীর পথ কাটতে গিয়ে থেমে যেত।